Saturday, July 23, 2016

কুড়িগ্রামে ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি, ত্রাণের জন্য হাহাকার


কুড়িগ্রামের উপর দিয়ে প্রবহমান ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, দুধকুমার, ধরলাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ জেলার ৯টি উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। উপজেলাগুলো হলো, রৌমারী, রাজীবপুর, চিলমারী, উলিপুর, রাজারহাট, কুড়িগ্রাম সদর, ফুলবাড়ি, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী। বন্যায় ওইসব এলাকার ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।




কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরিবর্তিত রয়েছে তিস্তা ও দুধকুমারের পানি।


বন্যার পানিতে বাড়িঘর প্লাবিত হওয়ায় অনেকে ব্রিজ ও উঁচু বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ না থাকায় দুর্ভোগ কবলিত মানুষের দুর্ভোগ আরো বেড়েছে। এদিকে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে ব্যাপক নদীভাঙন। গত কয়েকদিন ধরলার ভাঙনে বিলীন হয়েছে বসত ভিটা, আবাদি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা।


এ প্রসঙ্গে চর মেকালি গ্রামের বয়োবৃদ্ধ ছকিনা বেগম বলেন, ‘হামার আর যাওয়ার জাগা নাই, ধরলা নদী ভাঙ্গিয়া সোগই হামার শেষ করিল। হামরা অ্যালা কোটে যাই’।



ছকিনার মতোই এমন আহাজারি করছেন ভাঙনের শিকার আরো অনেক মানুষ। এসব মানুষ দুর্ভোগে পড়ে কষ্টে দিনাতিপাত করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন খোঁজ নেওয়া হয়নি।


তবে ২২ জুলাই দুপুরে চর মেকলির বন্যা ও ধরলায় ভাঙনের শিকার প্রায় একশ’ মানুষের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করে ফুলবাড়ী উপজেলা প্রশাসন।


ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে, ৫ কেজি চাল, ১ কেজি চিনি, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি চিড়া, ১ লিটার তেল, ১ কেজি লবণ, এক প্যাকেট মোমবাতি ও ২টি দিয়াশলাই। ত্রাণ বিতরণের খবর পেয়ে অনেকে ছুটে আসলেও তাদের অনেককে খালিহাতে বাড়ি ফিরতে হয়েছে।



এ প্রসঙ্গে সন্তোষপুর গ্রামের আবদুর রহিম বলেন, ‘ত্রাণ দেয় শুনি ছুটে আইছি, কিন্তু আইসা তো কিছুই পাইলাম না। যে ত্রাণ দিছে তাতে অনেকেই ত্রাণ পায় নাই।’


এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালেব মোল্লা জানান, কুড়িগ্রামের ৯টি উপজেলায় বন্যা, ভাঙন ও দুর্ভোগকবলিত মানুষদের জন্যে ১৯২টন চাল ও ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বিতরণ করা হচ্ছে। কুড়িগ্রাম সদর, রৌমারী, রাজীবপুর, চিলমারী, নাগেশ্বরী উপজেলায় দুর্ভোগ কবলিত মানুষের সংখ্যা বেশি হওয়ায় অন্যান্য উপজেলার চেয়ে এসব উপজেলায় ত্রাণ সহায়তা বাড়ানো হয়েছে।



No comments:

Post a Comment