Thursday, August 25, 2016

চিটাগং এর সন্তান অধ্যাপক ড. মাহফুজুল হক চৌধুরী চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি (সিআইইউ)’র নতুন উপাচার্য

অধ্যাপক ড.মাহফুজুল হক চৌধুরী:


১৯৫৩ সালে জন্মগ্রহণ করা ড.মাহফুজুল হক চৌধুরী চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের মরহুম জহিরুল্লাহ চৌধুরীর সন্তান।  ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিএ (সম্মান) এবং ১৯৭৮ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৯ সালে প্রভাষক হিসেবে চবি’র রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগে যোগদান করে ১৯৯৬ সালে অধ্যাপক পদে উন্নীত হন। ১৯৯২ সালে  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি এবং ২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাদার্ন ইলিনইস বিশ্ববিদ্যালয়, ২০০৬ সালে জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ডিউক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট ডক্টরাল ডিগ্রি অর্জন করেন।  বিভিন্ন গবেষণা কাজের জন্য পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার।


বন্দরনগরী চট্টগ্রামের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় অনন্য সংযোজন চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি (সিআইইউ)। ১৯৯৯ সালে ঢাকাস্থ ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ বা আইইউবি’র শাখা ক্যাম্পাস হিসেবে যাত্রা শুরু হলেও, ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বাংলাদেশ সরকার ও ইউজিসি’র অনুমোদন লাভ করে। শিক্ষার মানোন্নয়নে যুগোপযোগী পদক্ষেপ, অভিজ্ঞ ও বিদেশি ডিগ্রিধারী শিক্ষকদের উপস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয়কে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে। সমাজ সেবার অঙ্গীকার নিয়ে গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে এ বিশ্ববিদ্যালয়। কর্তৃপক্ষ আশা করছেন আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ আইডিয়াল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে।


রাজনৈতিক অস্থিরতা, যুগোপযোগী শিক্ষার অভাব, নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন না হওয়া এবং কাঙ্খিত বিষয়ে পড়ার সুযোগ না পাওয়ায় বেসরকারি বিশ্বদ্যিালয়ের দিকে ঝুঁকছে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু মানসম্পন্ন শিক্ষার অভাব, ইউজিসি রুলস না মানাসহ বিভিন্ন কারণে বিতর্কিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। উচ্চশিক্ষা নিয়ে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেন বন্দরনগরীতে বেসরকারি পর্যায়ে অন্যতম সেরা চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মাহফুজুল হক চৌধুরী।


তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও যেসব বিশ্ববিদ্যালয় মানসম্পন্ন শিক্ষা দান করছে সেসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পড়ার আগ্রহ রয়েছে।


শিক্ষা দানে সিআইইউ নর্থ আমেরিকান কারিকুলাম পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকে জানিয়ে তিনি বলেন, এখানের শিক্ষকরা বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ ডিগ্রিধারী। ফলে মানসম্পন্ন শিক্ষা আমরা নিশ্চিত করতে পারছি।


কেবল চট্টগ্রাম নয়, পুরো দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন জানিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই অধ্যাপক বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হলেও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছি। এতে যে কোন বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।


বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের রুলস অনুযায়ী সিআইইউ পরিচালনা করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সকল অনুষদে ডিন ও বিভাগের চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে প্রতিমাসে শিক্ষার মানসহ বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করে সমস্যা চিহ্নিত করি।


বিশাল লাইব্রেরি, খেলার মাঠ, পর্যাপ্ত অবকাঠামোসহ স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে বিশিষ্ট এই শিক্ষাবিদ বলেন, এখন থেকে প্রতিমাসে শিক্ষকদের সঙ্গে, প্রতি সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বছরে একবার অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবো।


তিনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অস্থায়ী শিক্ষক দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর প্রতি ঝোঁক বেশি। তবে এখানে অধিকাংশই স্থায়ী শিক্ষক। যেসব বিভাগে শিক্ষক সংখ্যা কম সেখানে নিয়োগ দিতে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।


অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় সিআইইউতে টিউশন ফি বেশি কেন জানতে চাইলে ড.মাহফুজুল হক বলেন, মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে ভাল শিক্ষক দরকার। ভাল শিক্ষক মানে ভাল বেতন, সুযোগ সুবিধা। ল্যাব, লাইব্রেরি অন্যান্য সুযোগ সুবিধাও প্রয়োজন। যা এখানে শতভাগ নিশ্চিত করা হয়। ফলে এখানে ফি অনেক বেশি।


বেসরকারি অনেক বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ম কানুন মেনে না চলায় সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শুরু হয়েছে আমেরিকা থেকে। সেখানে সৎ উদ্দেশ্য এবং সমাজ সেবার ব্রত নিয়ে ব্যবসায়ীরা ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ওই বোর্ডের অধীনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতির সেবা করেন। সেখান থেকে আর্থিক কোন সুবিধা তারা আশা করে না। কিন্তু আমাদের দেশে বাণিজ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে চালু হওয়াতে শিক্ষার মান ঠিক রাখতে পারছে না।


সিআইইউ দেশের নাম করা ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে গঠিত একটি ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে পরিচালিত হয় জানিয়ে তিনি বলেন, তারা প্রকৃত অর্থেই একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে সমাজ সেবা করতে চায়। এখান থেকে কোন সুবিধা তারা নেন না।


আগামী ১০ বছরের মধ্যে একটি আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা নিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠবে বলে প্রত্যাশা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষকের।

No comments:

Post a Comment