Wednesday, August 24, 2016

অবৈধ পার্কিং ও ফুটপাত বাণিজ্যঃ চট্টগ্রাম মহানগরের তিন লেনের রাস্তা রূপ নেয় এক লেনে !

অবৈধ পাকিংকে তিন লেনের রাস্তা রূপ নেয় এক লেনে ।। ফুটপাত-রাস্তায় হকার পাকিং ।। আমরা গাড়ি চলার চিন্তা করি, কিন্তু কোথায় থামবে সেজন্য পরিকল্পনা করি না : বুয়েট বিশেষজ্ঞ ।। মাত্র ২ শতাংশ লোকের (গাড়ির মালিক ও দোকানদার) জন্য নগরবাসী ফুটপাতে হাঁটার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন । এটা মেনে নেয়া যায় না : স্থপতি জেরিনা হোসেন


met034চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর করা নগরীর একমাত্র শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পাবলিক টয়লেট ছিল জিইসি মোড়ে। আর এর উপরে ছিল জামান হোটেল। ভবনটির পার্কিং স্পেসে পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করার কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তা ভেঙে গাড়ির পার্কিং স্পেস তৈরি করা হয়েছিল। একইভাবে ইফকো কমপ্লেক্স ভবনের নিচতলার দোকানগুলো ভেঙে পার্কিং স্পেস নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু এখন এসব স্থানে গড়ে উঠেছে দোকান, বিপরীতে ফুটপাত ও রাস্তাই হয়ে উঠেছে পার্কিংয়ের স্থান। এই চিত্র শুধু নগরীর জিইসি মোড় এলাকা নয়, পুরো নগরীর। পুরো নগরীই যেন অঘোষিত পার্কিং স্পেস।
‘আমরা শুধু গাড়ি চলার চিন্তা করি কিন্তু থামার চিন্তা করি না’ জানিয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এবং ট্রাফিক বিশেষজ্ঞ ড. সামসুল হক বলেন, ‘জরিপে দেখা গেছে একটি গাড়ি তার জীবদ্দশায় ৫ শতাংশ সময় রাস্তায় চলে। ৯৫ শতাংশ সময় অফিসে, বাসায় কিংবা মার্কেটে বসে থাকে। আমরা সবাই প্ল্যানিং করি রাস্তায় চলাচলের কথা মাথায় রেখে। কিন্তু যে ৯৫ শতাংশ সময় বসে থাকে তা নিয়ে কোনো প্ল্যানিং করি না।’
বুয়েটের এই বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, ‘কোথায় কোথায় এসব পার্কিং স্পেস হবে তা নগর পরিকল্পনার অংশ। এখন আমাদের নগর নিয়ে যারা পরিকল্পনা করেন তাদেরকে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। ভবনে পার্কিং স্পেস নিশ্চিত করার দায়িত্ব চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ)। পার্কিং স্পেস নিশ্চিত করতে না পারলে ও পার্কিং হাব তৈরি করতে না পারলে রাস্তাজুড়ে গাড়ি পার্ক হবে এটাই স্বাভাবিক।’
ড. সামসুল হকের সাথে সহমত পোষণ করে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া বলেন, আমাদের রাস্তাগুলো পর্যাপ্ত চওড়া রয়েছে। রাস্তার চওড়া নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। কিন্তু তিন লেনের রাস্তার একলেন, আবার কোথাও কোথাও তা দুই লেন পর্যন্ত থাকে পার্কিং ও অবৈধ দখলে। ফলে চওড়া রাস্তা থাকার সুবিধা আমরা নিতে পারি না এবং যানজট হচ্ছে। গত কয়েকদিন নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রায় সব সড়কেই রয়েছে অবৈধ পার্কিং ও ফুটপাত দখলের ঘটনা। এমনকি এমন অনেক এলাকা রয়েছে যেখানে ফুটপাতের ওপর গাড়ি পার্ক করে রাখা হয়েছে। মানুষ হাঁটাচলার কোনো জায়গা নেই। গত ১৬ আগস্ট দুপুরে আগ্রাবাদ বাদামদতলী মোড় থেকে দেওয়ানহাট মোড় পর্যন্ত দেখা যায় রাস্তার উভয়পাশে পুরো এক লাইন করে গাড়ি পার্ক করা রয়েছে। এরমধ্যে আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড় থেকে চৌমুহনী ফায়ার সার্ভিস পর্যন্ত রাস্তার উভয়পাশের ব্যাটারি ও রডের দোকান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে যারা পণ্য কিনতে আসছেন তাদের গাড়ির সাথে রয়েছে দোকান মালিকদের গাড়ি। অপরদিকে, চৌমুহনী ফায়ার সার্ভিস থেকে দেওয়ানহাট মোড় পর্যন্ত গাড়ির ব্যাটারির দোকান, গাড়ির যন্ত্রাংশের দোকান ও গাড়ির গ্লাসের দোকানের সামনে সারিবদ্ধভাবে পার্ক করা থাকে গাড়ি। রাস্তার ওপর গাড়ির যন্ত্রপাতি লাগানো ও মেরামতের কারণে সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় আগ্রাবাদ শেখ মুজিব রোডের আলোচ্য অংশে যানজট লেগেই থাকে। বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের সামনে থেকে গাড়িগুলো ডান দিকে মোড় নেয়ায় এখানেও প্রায়ই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
সিডিএ এভিনিউ’র উভয় পাশে পার্কিং স্থান
গরীবুল্লাহ শাহ মোড় থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশের একটি লেন অঘোষিতভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে পার্কিংয়ের স্থান হিসেবে। গরীবুল্লাহ শাহ মোড় থেকে ইউনুস্কো জিইসি কনভেনশন সেন্টারের আগ পর্যন্ত থাকা রেস্টুরেন্ট, মার্কেট ও বাণিজ্যিক ভবনগুলোর গাড়ি রাস্তা ও ফুটপাতের ওপরে পার্ক করা থাকে। হাঁটার জন্য পথচারীকে রাস্তার ওপর দিয়ে অথবা গাড়ির ফাঁক দিয়ে হাঁটতে হয়। ইউনুস্কো শপিং সেন্টারে পার্কিং স্পেস থাকার পরও মার্কেটের সামনের ফুটপাত ও রাস্তায় গাড়ি পার্ক করা থাকে। আর এর পাশের মদিনা টাওয়ারের পার্কিং স্পেসটি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। একইভাবে রাস্তার বিপরীত দিকে পেনিনসুলা থেকে ব্লুসম গার্ডেনের আগ পর্যন্ত রাস্তাটির একটি লেনে সারিবদ্ধভাবে গাড়ি পার্ক করা থাকে। এই জায়গাটি ফ্লাইওভার করার আগে বৈধ পার্কিং স্পেস হলেও ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ শুরুর পর তা আর পার্কিং স্পেস হিসেবে নেই বলে সিডিএ থেকে জানা যায়।
অপরদিকে, সিডিএ এভিনিউ টাওয়ারটিতে ঢাকা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক ও হোটেল প্যাভেলিয়নসহ গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অফিস থাকলেও ভবনের পার্কিং স্থানটি বন্ধ করে রাখা হয়।
জিইসি মোড় থেকে নাসিরাবাদ বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের আগ পর্যন্ত এস্থানে অনেকগুলো রেস্টুরেন্ট, বাণিজ্যিক অফিস রয়েছে। এখানকার ইফকো কমপ্লেক্সের নিচতলা পুরোটা পার্কিং হিসেবে বরাদ্দ থাকায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সব ভেঙে দিয়ে পার্কিং স্পেস গড়ে তোলা হয়েছিল। এখন আবার নিচতলায় দোকান গড়ে উঠেছে এবং গাড়িগুলো সব রাস্তায় ও ফুটপাতে পার্ক করা থাকে সবসময়। বিপরীত দিকে কামাল স্টোরের সামনে থেকে সানমার ওশ্যান সিটি পর্যন্ত রাস্তায় ও ফুটপাতে গাড়ি পার্ক করা থাকে।
ষোলশহর ফরেস্ট গেট থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত রাস্তার উভয়পাশে গাড়ি পার্ক করা থাকে, একইভাবে মুরাদপুর থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত কোথাও ফুটপাত দখল করে রাখা হয়েছে দোকানের সামগ্রী আবার কোথাও পার্কিং।
জুবিলী রোডের ফুটপাত ও রাস্তা গাড়ির দখলে
জুবিলী রোডে হার্ডওয়ার, মেশিনারিজ পার্টস, টাইলসের দোকান, পাইপের দোকান, পর্দা ও ফোমের দোকান রয়েছে। রাস্তার একটি লেন দখল করে এসব দোকানের পণ্য লোডিং ও আন-লোডিংয়ের কাজ চলে। ব্যবসায়ীদের ভাব, যেন রাস্তার মালিক তারা। শুধু রাস্তায় নয়, ফুটপাতের পুরো অংশজুড়ে পাইপ ও লোহার বিভিন্ন সামগ্রী রেখে দেয়া হচ্ছে বিক্রির জন্য। দেখলে মনে হবে যেন, ফুটপাতটি তাদের দোকানের সম্পত্তি। এ বিষয়ে সংবাদকর্মী পরিচয় গোপন করে ব্যবসায়ীদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, পুরো নগরীতে দোকানের সামনের অংশটি ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরাও করছি। এতে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়। আর মানুষ হাঁটার জন্য পাশে জায়গা রাখা হয়েছে।
নিউমার্কেট, জিপিওর সামনে ও স্টেশন রোড ফুটপাত হকারদের দখলে
স্টেশন রোডের পুরাতন রেল স্টেশন থেকে শুরু করে আমতলা মোড় পর্যন্ত পুরো বেষ্টনির ফুটপাত দখল করে রেখেছে হকাররা। যেখানে হকার নেই সেখানকার ফুটপাত দখল করে আছে গাড়ি। বাধ্য হয়ে রাস্তা দিয়েই হাঁটতে হয় পথচারীকে। জিপিওর সামনের ফুটপাত দোকান ও ভাসমান হকারদের দখলে থাকে।
কাপাসগোলা-বহদ্দারহাট ফুটপাতে ট্যাক্সির গ্যারেজ
নগরীর কাপাসগোলা থেকে বহদ্দারহাট মোড় পর্যন্ত রাস্তার একপাশ সিএনজি ট্যাক্সির স্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। রাস্তার উভয়পাশে সিএনজি ট্যাক্সির গ্যারেজ থাকায় অনেকেই রাস্তার ওপরে সিএনজি রেখে তা মেরামতের কাজ করছে। দুই লেনের রাস্তাটির দুই দিক দিয়ে চেপে ধরেছে ট্যাক্সি পার্কিং স্ট্যান্ড।
পার্কিং মেডিকেলের সামনের রাস্তায়ও
কেবি ফজলুল কাদের চৌধুরী রোডের অলিয়ঁস ফ্রঁসেজ মোড় থেকে প্রবর্তক মোড় পর্যন্ত রাস্তার একপাশজুড়ে থাকে ক্লিনিককন্দ্রিক পার্কিং। ওষুধের দোকান, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালগুলোর নিজস্ব পার্কিং স্পেস না থাকায় রাস্তার ওপরেই গাড়ি পার্ক করা থাকে। একইভাবে অনেক হাসপাতালের পার্কিং স্থান থাকলেও তা শুধুমাত্র ওই হাসপাতালের চিকিৎসক কিংবা কর্মকর্তাদের পার্কিং স্পেস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। রোগীদের গাড়ি এসব স্থানে পার্ক করা যায় না।
স্টেডিয়াম পাড়ায় নেই কোনো পার্কিং স্পেস
চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামকে কেন্দ্র করে চারপাশে গড়ে উঠেছে অনেকগুলো রেস্টুরেন্ট। রেস্টুরেন্টের পাশাপাশি এই এলাকায় রয়েছে চট্টগ্রামের প্রথম পাঁচ তারকা হোটেল র‌্যাডিসন ব্লু বে ভিউ, রয়েছে হল ২৪, চট্টগ্রাম ক্লাব, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন ও লেডিস ক্লাব। স্টেডিয়াম পাড়ার রেস্টুরেন্টের সামনে এক লেন দখল করে সন্ধ্যার পর সারিবদ্ধভাবে পার্কিং থাকে, আর যদি চট্টগ্রাম ক্লাব, হল ২৪, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বা লেডিসক্লাবে কোনো অনুষ্ঠান থাকে তাহলে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে স্টেডিয়াম মোড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন পর্যন্ত দীর্ঘ জটলা লেগে থাকে।
নগর বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য
স্থপতি জেরিনা হোসেন বলেন, ফুটপাত নাগরিকের অধিকার। একইভাবে রাস্তায় নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারাও তাদের অধিকার। কিন্তু মাত্র ২ শতাংশ (গাড়ির মালিক ও দোকানদার) মানুষের জন্য নগরবাসী সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।’
তিনি আরো বলেন, ‘সিডিএ নগরীর ভবনগুলোতে পার্কিং স্পেস রাখার বিষয়টি মনিটরিং না করার কারণে দিন দিন তা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। একইভাবে ফুটপাতগুলো দখল করে রেখেছে পাশের দোকানদাররা।’
এদিকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ)’র নগর পরিকল্পনাবিদ আবু ঈসা আনসারী বলেন, ‘যেকোনো বাণিজ্যিক এলাকায় পার্কিংয়ের জন্য একটি স্থান নির্ধারিত থাকে। সেখানে বাণিজ্যিকভাবে পার্কিং গড়ে ওঠে। বেসরকারি উদ্যোগে কেউ না কেউ এ ধরনের পার্ক গড়ে তুলতে পারে। আর তা হলে এ ধরনের ভাসমান পার্ক ওই নির্ধারিত জায়গায় হবে এবং নগরজুড়ে পার্কিং থাকবে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘সিডিএ একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। সিডিএ এ ধরনের পার্কিং স্থান গড়ে তুলতে পারে না।’
মেট্রোপলিটন দোকান মালিক সমিতির বক্তব্য
ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে রাখার কথা স্বীকার করে চিটাগাং মেট্রোপলিটন শপ ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মার্কেট ও দোকানের নিচতলা পার্কিংয়ের জন্য খালি করা হয়েছিল, আমরাও তা করেছি। পরবর্তীতে সময় পরিবর্তনের সাথে নিচতলায় আবারো দোকান গড়ে উঠেছে। প্রশাসনের কর্তারা (সিডিএ) কিছু বলেন না, আর সেই সুযোগ নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরাও। এতে নগরীতে দিন দিন যানজট বাড়ছে।‘
তিনি আরো বলেন, ‘জিইসি মোড়ে ওয়েলফুডের সামনে কোনো পার্কিং স্পেস নেই, ফুটপাতের ওপরে গাড়ি পার্ক করে। যেখানে সিডিএ চেয়ারম্যানের প্রতিষ্ঠানের এই অবস্থা সেখানে আমি আপনি (প্রতিবেদক) সেই সুবিধা নেব না কেন ?’
সিডিএ’র বক্তব্য
চট্টগ্রাম শহরের বেশিরভাগ বাণিজ্যিক ভবনের পার্কিং স্পেস নেই আর যাদের রয়েছে তাও পিকটাইমে পর্যাপ্ত নয় জানিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) ভারপ্রাপ্ত প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি শাহীনুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা নগরীর প্রধান ১৯টি সড়কের পাশের ভবন মালিকদের সাথে কথা বলে পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত জায়গা বের করে দেয়ার জন্য বলেছি, ভবন মালিকরা রোজার আগে এক মাসের সময় নিয়েছিলেন। এখন আবার এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হবে।’
চট্টগ্রামের মার্কেট, কনভেনশন সেন্টারগুলোর সামনের ফুটপাতে গাড়ি পার্কিং করা থাকে। একইভাবে এসব ভবনের যাওয়া যাত্রীদের নামার জন্য ‘পার্কিং বে’ থাকার কথা থাকলেও তা নেই কেন জানতে চাইলে স্থপতি শাহীনুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা ভবনের অনুমোদন দেয়ার সময় ৬ মিটার তথা ১৮ ফুট জায়গা খালি রেখে অনুমোদন দিয়েছি। এই জায়গায় তারা পার্কিং বে বা ড্রপিং বে করার কথা। যারা তা করেনি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
একটি আধুনিক শহরের পরিকল্পনায় বাণিজ্যিক এলাকায় পার্কিং স্পেসের জন্য জায়গা থাকে কিন্তু আমাদের এই শহরে তা নেই কেন - এমন প্রশ্নের জবাবে সিডিএ’র প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ (ভারপ্রাপ্ত) স্থপতি শাহীনুল ইসলাম খান বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহরের বাণিজ্যিক এলাকা আগ্রাবাদে পাকিস্তান আমলেই দুটি পার্কিং স্পেসের জন্য প্লট রাখা হয়েছিল। সেই দুটি পার্কিং প্লটের একটিতে গড়ে উঠেছে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ও অপরটিতে সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেট। আজ যদি এই দুটি জায়গা থাকতো তাহলে এখানে আমরা মাল্টিপল পার্কিং গড়ে তুলতে পারতাম।’
ট্রাফিক পুলিশের বক্তব্য
রাস্তায় পার্কিং প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ট্রাফিক পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (উত্তর) সুজায়েত ইসলাম কাউকে দোষারোপ না করে বলেন, ‘ভবনের অনুমোদন দিয়ে থাকে সিডিএ এবং তা মনিটরিংও তাদেরই করার কথা। একইভাবে রাস্তার উপরে কিংবা ফুটপাতে যদি কেউ গাড়ি পার্ক করে রাখে তাহলে সিটি করপোরেশন বা সিডিএ থেকে মোবাইল কোর্ট করা হয়ে থাকে।’
বন্দর জোনের ডিসি ট্রাফিক আবু সায়েম বলেন, ‘বাণিজ্যিক ভবনগুলোর সামনের ফুটপাত ও রাস্তায় পার্ক করার কারণে রাস্তার চওড়া কমে যাচ্ছে কথাটি সঠিক। কিন্তু অবৈধ পার্কিং বন্ধে আমাদের সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে।’

No comments:

Post a Comment