নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়ায় অবস্থিত নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জুন ও জুলাই মাসের বিলে বিশেষ ধরনের কারসাজি করে কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে হাতিয়ে নিয়েছে কয়েক কোটি টাকা। বছরে দুই থেকে চার বার সমিতি কার্যালয় তাদের মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রথম ৭৫ ইউনিটের অতিরিক্ত ইউনিট বাড়িয়ে বিলের হিসাব প্রদান করে গ্রাহকদের সাথে নিরব প্রতারণার মধ্য দিয়ে অবৈধভাবে এই টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ধরনের ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বড়াইগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের কাছ শুধুমাত্র জুন মাসের বিলেই কমপক্ষে ৬ কোটি টাকা অবৈধভাবে আয় করেছে। বিদ্যুৎ বিলে এই কারসাজি বা গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা দুর্নীতিরই সামিল বলছেন স্থানীয় সুধী সমাজ। অথচ গত ১৫ থেকে ৩০ জুন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ পল্লী বিদ্যুতের দুর্নীতি বিরোধী প্রচারণায় নেমেছিল যা কার্যালয়ের প্রধান ফটকে শুধুমাত্র একটি ব্যানার টাঙ্গানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো। অভিযোগে গ্রাহকরা জানায়, পল্লী বিদ্যুতের জুন মাসের বিলে কর্তৃপক্ষ ইচ্ছে করেই প্রথম স্ল্যাব ৭৫ অতিক্রম করে অতিরিক্ত ইউনিট দেখিয়েছে। কারণ প্রথম ৭৫ ইউনিটের জন্য গ্রাহকদের দিতে হয় ইউনিট প্রতি ৩ টাকা ৮০ পয়সা এবং ৭৫ অতিরিক্ত প্রতি ইউনিটের জন্য ৫ টাকা ১৪ পয়সা। এর ফলে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত ইউনিট দেখিয়ে ২ লক্ষ ১৫ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে এক মাসেই তদুর্ধ্ব ৬ কোটি টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নিয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের এই ধরনের কারসাজিতে গ্রাহকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হলেও এর কোন সমাধান তারা খুঁজে পাচ্ছেন না। ফলে একরকম নিরুপায় হয়েই ধার্যকৃত বিল পরিশোধ করেছেন গ্রাহকরা। সরেজমিনে উপজেলার ভবানীপুর, জোয়াড়ি, মাঝগাঁও, বনপাড়া, তিরাইল, গোপালপুর এলাকার বিভিন্ন গ্রাহকদের চলতি মাস সহ গত তিন মাসের বিলের হিসাবে দেখা গেছে, জুন মাসের বিলে এই অতিরিক্ত বিল দেখানো হয়েছে। যা পূর্ববতী মাসগুলোতে কম দেখানো হয়েছিলো। শুধু জুন মাস নয়, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এই ধরনের অতিরিক্ত বিল করার জন্য বছরের চার মাস অন্তর এই কৌশল অবলম্বন করে বলেও বিভিন্ন গ্রাহকগণ অভিযোগ তোলেন। কৌশলটা কি জানতে চাইলে গ্রাহকরা জানায়, পর পর দুই মাস ইচ্ছে করেই ৭৫ ইউনিটের কম খরচ দেখানোর পর পরবর্তী তৃতীয় মাসে মিটারে স্বাভাবিক ভাবেই বেশী ইউনিট দেখাবে। সেখানে ৭৫ এর অতিরিক্ত ইউনিট হলেই ইউনিট প্রতি ১ টাকা ৩৪ পয়সা অতিরিক্ত দিতে হয় গ্রাহকদের। আর এই কারসাজি করার জন্য মিটার রিডার বা বিল প্রস্ততকারীদের রয়েছে প্রয়োজনীয় মেধা ও প্রশিক্ষণ। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এই কারসাজির ফলে শুধু জুন মাসের বিলেই গড়ে ২০ ইউনিট অতিরিক্ত বিল করা হলে আদায় হয়েছে ৫ কোটি ৪০ লক্ষ ২ হাজার টাকা অথবা গড়ে মাত্র ১০ ইউনিট অতিরিক্ত বিল করা হলে আদায় হয়েছে ২ কোটি ৭০ লক্ষ ১ হাজার টাকা। এই টাকা আয়ের কৌশল গ্রাহকদের সাথে চরম ও ঘৃণ্য প্রতারণা উল্লেখ করে দুর্নীতিবাজ জিএম নিতাই চন্দ্র সরকারকে অপসারণ ও একইসাথে ৩ বছরের অধিক এই দপ্তরে কর্মরত কর্মকর্তাদের অন্যত্র বদলী করার দাবী জানান অভিযোগকারী গ্রাহকেরা। এ ব্যাপারে দায়িত্বরত জিএম নিতাই চন্দ্র সরকারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি দাবী করেন মোট গ্রাহকের মধ্যে শতকরা ৭৫ভাগ গ্রাহকের স্ল্যাব ৫০ ইউনিটের মধ্যে আছে। তবে এ ব্যাপারে সাংবাদিকরা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। গ্রাহকদের সঙ্গে এই ধরনের প্রতারণার মধ্য দিয়ে পল্লী বিদ্যুতের এই অবৈধ আয়ের টাকা গ্রাহকদের মধ্যে ফিরিয়ে দেয়ারও দাবি জানান অনেকে। |
Be SPONSORED Now ।| Be SPONSORED By | |
---|---|
২৭ জুলাই, ২০১৬ নামাজের সময়সূচি | |
ফজর | ভোর ৩:৪৪ মিনিট |
জোহর | বেলা ১১:৫৯ মিনিট |
আসর | বিকেল ৪:৩৬ মিনিট |
মাগরিব | সন্ধ্যা ৬:৪৭ মিনিট |
ইশা | রাত ৮:১০ মিনিট |
আগামীকালের সূর্যোদয় ভোর ৫:১১ মিনিট | আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬:৪৭ মিনিট |
No comments:
Post a Comment