Monday, July 18, 2016

মিশরের মুরসীর প্রস্থান ও তুরস্কের এরদোগানের আগমন - এরমধ্যেই আবর্তিত হবে আগামী দিনের গণতন্ত্র ও রাজনীতির বিশ্বায়ন ।

তাহরির স্কয়ারের মত গন-অভ্যুত্থান সৃষ্টির পর মিশরের ইতিহাসের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মুরসী সরকারকে উৎখাত করে বর্তমানে মিশরের ক্ষমতায় জোর করে বসে আছে জেনারেল সিসি সরকার। গোটা বিশ্বের চোখে এই সরকার অবৈধ, অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচার হিসেবে প্রশ্নবিদ্ধ ও চিহ্নিত হয়ে আছে। মুরসীপন্থীদের আর কিই বা করার আছে, একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে গণ আন্দোলন ও নির্বাচন দুটোই তারা অত্যন্ত সফলভাবে করে দেখিয়েছে, এরপরও যদি কিছু করতে হয় তাহলে সেটা আর গণতন্ত্র থাকবেনা, হামাস বা আই এস'র মত মিলিট্যান্ট সংগঠনের জন্ম দিতে হবে, কিন্তু মুরসীর মুসলিম ব্রাদারহুড গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে বলেই রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়ন, স্টিম রোলার সহ্য করেও এখন পর্যন্ত তাঁরা অস্ত্র হাতে তুলে নেয়নি এবং হামাস বা আইএস'র মতো কোন মিলিট্যান্ট বা জঙ্গি সংগঠন হিসেবে পরিচিত হয়নি। আপাতভাবে মুরসী বা ব্রাদারহুড পরাজিত হয়েছে বলে মনে হলেও বস্তুতপক্ষে গণতান্ত্রিক রাজনীতির নৈতিকতার বিচারে তাঁরাই জয়ী কেননা মুরসী বা ব্রাদারহুড সিসি সরকারকে শুধু নয় খোদ গণতন্ত্রকেই তাঁরা গোটা বিশ্বের কাছে এই জায়গাটিতে এখন পর্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ করে রেখেছে - এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বিশ্বের গণতন্ত্র এক কদমও এগুতে পারবে না আর এটাই মুসলিম ব্রাদারহুড তথা মুরসীর জয় বা মূল সফলতা। এবারে আসি এরদোগান প্রসঙ্গে। যদিও মুরসী প্রসঙ্গ বিস্মৃত হতে চললেও এরদোগান প্রসঙ্গ পাঠকমহল পুরোপুরি ওয়াকিবহাল । চোখের সামনেই দেখতে পাচ্ছে মিশরের মত গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত তো দূরের কথা উৎখাতের চেষ্টা হলেই কি পরিণতি ঘটে, যারা পালিয়ে গ্রিসে আশ্রয় খুঁজছিল তাদেরকেও ধরে এনে বিচার করা হচ্ছে, মৃত্যুদণ্ডের বিধানের কথাও উঠছে। তাহলে কি প্রমাণ হল- বিশ্ব মিশরের মত সিসি সরকার নয় এরদোগানের মত গণতান্ত্রিক সরকার দ্বারাই পরিচালিত হবে। যারা এর বিরুদ্ধে যাবে জনরোষের শিকার হবে এবং ভয়ানক পরিণতি বরণ করবে। এর মধ্য দিয়ে মিশর সহ সারাবিশ্বের জেনারেলদের কাছে একটা মেসেজ গেল। গণতন্ত্র অবারিত থাকল, যেটা মিশরে অবরুদ্ধ হয়ে আছে। মিশরের সিসি সরকার এর থেকে শিক্ষা গ্রহণ না করলে বিশ্ব রাজনীতিই অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে বারবার, মিশরের মুরসীর প্রস্থান ও তুরস্কের এরদোগানের আগমন - এরমধ্যেই আবর্তিত হবে আগামী দিনের গণতন্ত্র ও রাজনীতির বিশ্বায়ন ।


 

No comments:

Post a Comment