সাড়ে ২৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত রেল সংযোগ (প্যাকেজ নং ডব্লিউডি-১) স্থাপনে চীনা প্রতিষ্ঠান ‘চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড’ (সিআরইসি)-কে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ‘সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠকে এটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের অনুপস্থিতিতে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাকসুদুর রহমান পাটোয়ারী সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত রেল সংযোগসহ বৈঠকে মোট ৫টি ক্রয় প্রস্তাব ও একটি ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগের কাজটি চীনা অর্থায়নে ও সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ১৭২ কিলোমিটার মূল রেল লাইন ও ৪৩ দশমিক ২২ কিলোমিটার লুপ লাইন এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজসহ এতে মোট ব্যয় হবে প্রায় ৩১৪ কোটি ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ ২৭ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা।
মাকসুদুর রহমান আরো জানান, বৈঠকে পটুয়াখালীর জেলার কলাপাড়া উপজেলাধীন কলাপাড়া-বালিয়াতলী-গঙ্গামতি সড়কে আন্ধারমানিক নদীর ওপর ৬৬৭ মিটার দীর্ঘ প্রি-স্ট্রেসড গার্ডার ব্রিজ (প্যাকেজ নং কলা/০১/২০১৩) নির্মাণকাজের ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ কাজটি পেয়েছে ম্যাক্স-রেনক্যান জেভি। এতে ব্যয় হবে ১৬৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
তিনি জানান, অন্যান্যের মধ্যে ডিএপি ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড-এর জন্য ৫০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক এসিড (পিটুওফাইভ : ৫২-৫৪%) আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
দেশীয় প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স প্রোটন ট্রেডার্স’ এটি সরবরাহ করবে। প্রতি মেট্রিক টন ৩৫৫ দশমিক ৪১ ডলার হিসাবে এতে ব্যয় হবে ১৪৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ‘বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন’ (বিএডিসি) ও ‘বেলারুশিয়ান পটাশ কোম্পানির মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ১ম লটের ৩০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয় বৈঠকে। প্রতি টন ২৩০ দশমিক ৩৮ ডলার হিসাবে সার আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ৫৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
অতিরিক্ত সচিব জানান, বৈঠকে ‘প্রজেক্ট ডিজাইন অ্যাডভান্স ফর রেজাল্ট-বেজড রুরাল কানেক্টিভিটি প্রোগ্রাম’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় কারিগরি উপদেষ্টা গ্রুপের জন্য পরামর্শক হিসেবে স্প্যানিশ প্রতিষ্ঠান ‘ইপসিকা সার্ভিসেসকো ডি ইঞ্জিনিয়ার্স’-কে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
এ ছাড়া দুই বেজমেন্ট বিশিষ্ট সিভিল, স্যানিটারি, অভ্যন্তরীণ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগসহ রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে ১১তলা নির্বাচন কমিশন ভবন নির্মাণের প্রথম ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয় বলেও জানান মাকসুদুর রহমান পাটোয়ারী।
ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুযায়ী প্রকল্প ব্যয় ১৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ‘টিইএএল-টিবিএল কনসোর্টিয়াম লিমিটেড’।
No comments:
Post a Comment