সারাদেশে প্রায় ১৭ লাখ একর সরকারি ভূমি প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন। এরমধ্যে রেলের জমি রয়েছে ৪ হাজার ৩৯১ একর। বাকী ১২ লাখ ৬০ হাজার ২০০ একর খাস জমি। এসব ভূমি উদ্ধারে দীর্ঘদিন ধরে তাগাদা দেয়ার পরও দখলমুক্ত হচ্ছে না। জাতীয় সংসদ ভবনে বুধবার অনুষ্ঠিত ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এনিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। কমিটি অতিদ্রুত অবৈধ দখলে ভূমি উদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছে।
কমিটির সভাপতি মো. রেজাউল করিম হীরার সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন-কমিটির সদস্য মীর শওকাত আলী বাদশা, মো. একাব্বর হোসেন, মো. মকবুল হোসেন, সামছুল আলম দুদু, এ, কে, এম মাঈদুল ইসলাম, জাহান আরা বেগম সুরমা এবং গাজী ম,ম, আমজাদ হোসেন মিলন। এছাড়া আরও ছিলেন ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ মন্ত্রণালয় এবং সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। কমিটি সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে অবৈধ দখলভূক্ত সরকারি জমি উদ্ধার এবং এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়। তথ্য মতে, বর্তমানে সারাদেশে খাস জমির পরিমাণ ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ৯৫৭ একর। এরমধ্যে ১২ লাখ ৬০ হাজার ২০০ একর সরকারি জমিই অবৈধ দখলে। অপরদিকে সরকারি হিসাবে সারা দেশে প্রায় ১৩ লাখ একর সরকারি জমি অবৈধ দখলে রয়েছে। এর মধ্যে কৃষি-অকৃষি খাস জমির পরিমাণ প্রায় ৪ লাখ ২৬ হাজার একর, অর্পিত সম্পত্তির পরিমাণ ৩ লাখ ৭৪ হাজার একর। ২ লাখ ৫২ হাজার একর বনভূমি, ২ লাখ ৭ হাজার একর সরকারি প্রতিষ্ঠানের জমি এবং ১ হাজার ২০০ একর পরিত্যক্ত সরকারি জমি।
এদিকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বাংলাদেশ রেলওয়ের ৪ হাজার ৩৯১ একর ভূমি অবৈধ দখলে রয়েছে। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে প্রায় ১ হাজার ৪ দশমিক ১২ একর এবং পশ্চিমাঞ্চলে প্রায় ৩ হাজার ৩৮৭ দশমিক ২৭ একর। এরমধ্যে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অবৈধ দখলভুক্ত রেলভূমির পরিমাণ ৯২২ দশমিক ৩৪ একর। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি দখল করে রেখেছেন ৩ হাজার ৩৭৮ দশমিক ২২ একর এবং ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দখলভুক্ত ভূমি রয়েছে ৯০ দশমিক ৮৩ একর। কমিটি এসব ভূমি উদ্ধারে অতিদ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছে। এদিকে বৈঠকে ডিজিটাল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কার্যক্রম চালু আছে এমন জেলা সরেজমিন পরিদর্শন করে ওইসব এলাকার জনগণের মাধ্যমে কিভাবে উপকৃত হচ্ছে তা জানার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৈঠকে গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের চলমান কার্যক্রমে স্ব স্ব নির্বাচনী এলাকার এমপিদের সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। কমিটি গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পগুলোর বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বেশি সংখ্যক লোক যাতে গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের সুবিধা পায় এ বিষয়ে গুরুত্ব দেয়ার সুপারিশ করে।
|
No comments:
Post a Comment