Pages

Wednesday, August 31, 2016

২ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে শুরু হচ্ছে ফোবানা সম্মেলন

২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে পর্দা উঠতে যাচ্ছে ৩০তম ফোবানা সম্মেলনের জমকালো আসর। দুই বছরের আলোচনা, সমালোচনা আর নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে অবশেষ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ফোবানা সম্মেলন। এই সম্মেলন উপলক্ষে ইতিমধ্যেই বাণী দিয়েছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, কয়েকজন গভর্নর, সিনেটর ও কংগ্রেসম্যানসহ মূলধারার অন্যান্য নেতারা।





তাঁরা ছাড়াও বাণী দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিলারি রডহাম ক্লিনটন। বাণীতে তিনি ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধারণ করেছে যা সত্যি প্রশংসনীয়। বিশেষ করে দারিদ্র্য দূরীকরণ, কৃষিক্ষেত্রে সফলতা, মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধারণ করেছে।
এদিকে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিতব্য তিন দিনব্যাপী ফোবানা সম্মেলনের বিভিন্ন কর্মসূচি যাচাই বাছাই শেষে অনুমোদন করেছেন সম্মেলনের সভাপতি মোহাম্মদ আলমগীর, কনভেনর এ টি এম আলম ও সদস্যসচিব নুরুল আমিন। গত ২৮ আগস্ট রোববার এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ফোবানা সম্মেলনের এই শীর্ষ তিন কর্মকর্তা তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের যাবতীয় কর্মসূচির চূড়ান্ত অনুমোদন প্রদান করেন। অনুমোদনকৃত কর্মসূচি অনুযায়ী ফোবানা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
এই সম্মেলন উপলক্ষে একটি স্যুভেনির প্রকাশনার কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিক আনিস আহমেদের সম্পাদনায় ও এন্থনী পিউস গমেজের তত্ত্বাবধানে প্রকাশিতব্য এই স্যুভেনিরের কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। সম্মেলনে ইয়ুথ ফোরাম, র‍্যালি, কাব্য জলসা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, সেমিনার, সায়েন্স ফেয়ার, ট্যালেন্ট শো, ব্যান্ড শো, ফ্যাশন শো, স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আমন্ত্রিত শিল্পীদের পরিবেশনার জমজমাট আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। আমন্ত্রিত শিল্পীদের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে আসছেন এস আই টুটুল, ফাহমিদা নবী, শুভ্র দেব, অনিমা ডি কষ্টা, কুমার বিশ্বজিৎ, জানে আলম, বেবি নাজনীন, মাকসুদের ঢাকা ব্যান্ড, নাহিদ নাজিয়া, এম এ শোয়েব, তাজুল ইমাম, কৃষ্ণা তিথি, শাহ মাহবুব ও সামিয়া মাহবুব প্রমুখ। এ ছাড়া ভারতের কলকাতা থেকে আসছেন নচিকেতা, অনুপমা মুক্তি ও শ্রেয়া গুহ ঠাকুরতা প্রমুখ।
ফোবানা-বাংলা আর বাঙালির মুখ এই স্লোগানে সম্মেলনের মূল থিম ‘আমি হাজার বছরের বাঙালি’ এই প্রতিপাদ্যের মধ্যে দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধনী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান তৈরি করা হয়েছে। প্রায় ৪৫ মিনিটব্যাপী উদ্বোধনী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশের বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী ওয়ার্দা রিহ্যাব ও তার দলের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হবে। ওয়ার্দা রিহ্যাব ও তার দল সম্মেলনের তৃতীয় দিনে সমাপনী অনুষ্ঠানেও নৃত্য পরিবেশন করবেন।
ফোবানা সম্মেলনের প্রস্তুতির নানা দৃশ্যসম্মেলনে ওয়াশিংটনের সংগঠন ধ্রুপদ, একতারা, বাংলা স্কুল, ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ফ্যামিলি, বর্ণমালা, মঞ্জুরি নৃত্যালয়, উদয়ন, সুরবিতানসহ বিভিন্ন সংগঠন অনুষ্ঠানের পসরা সাজিয়েছে। এ ছাড়া সম্মেলনে উত্তর আমেরিকার প্রায় ৭০টি সংগঠন রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছে। এর মধ্যে প্রায় ২৫টির মতো সংগঠন অনুষ্ঠানে তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করবে। সম্মেলনের প্রথম দিন সন্ধ্যায় আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে আমন্ত্রিত অতিথি শিল্পীদের সম্মানে ব্ল্যাকটাই ডিনারের আয়োজন করা হয়েছে।
ফোবানা সম্মেলনের আয়োজন নিয়ে সম্মেলনের সভাপতি মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ৩০তম ফোবানা হবে একটি ঐতিহাসিক ফোবানা সম্মেলন। ওয়াশিংটনপ্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগে ওয়াশিংটনের মাটিতেই ফোবানার যাত্রা শুরু হয়েছিল। ৩০ বছর পর আবারও ওয়াশিংটনে ফিরে এসেছে ফোবানা সম্মেলন। এই সম্মেলনকে কেন্দ্র ওয়াশিংটনের পুরো বাংলাদেশি কমিউনিটি আজ ঐক্যবদ্ধ। সবাই আজ একটি ফোবানার ছায়াতলে এসে সমবেত হয়েছে। ওয়াশিংটনপ্রবাসী আরও একবার প্রমাণ করেছে তারা পারে এবং তারাই পারবে। ৩০তম ফোবানা সম্মেলনকে ঘিরে আজ ওয়াশিংটনের বাংলাদেশিদের ঘরে ঘরে আনন্দ উৎসব আর আয়োজন চলছে।
অনুষ্ঠানের আয়োজন সম্পর্কে ফোবানা সম্মেলনের কনভেনর এ টি এম আলম বলেন, সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে অবশেষে ওয়াশিংটনের মাটিতে একটি ঐতিহাসিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই সম্মেলনকে সফল ও সার্থক করার জন্য দল মত নির্বিশেষে সবাই আজ ফোবানার ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এবং অত্যন্ত সুচারুভাবে যাচাই বাছাই করে পুরো অনুষ্ঠানকে সাজানো হয়েছে।
সম্মেলনের সদস্যসচিব নুরুল আমিন বলেন, একটি সফল সম্মেলন করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তার সবকিছুই সাধ্যমতো সম্পন্ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, অতীতের যেকোনো ফোবানা সম্মেলনের চাইতে ওয়াশিংটনের ফোবানা সম্মেলন হবে একটি ব্যতিক্রমধর্মী ফোবানা সম্মেলন। তিনি আরও বলেন, ফোবানা সম্মেলনকে ঘিরে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এই ফোবানা সম্মেলনে যে কেউ কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাবার চেষ্টা করলেই তাকে আটক করার পুরো ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছে। আমাদের নিজস্ব সিকিউরিটি ব্যবস্থার পাশাপাশি আর্লিংটন কাউন্টি পুলিশ ও এফবিআই উপস্থিত থেকে সম্মেলনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। এবারের সম্মেলনে মূলধারার অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ আসবেন। এ জন্য সম্মেলনকে ঘিরে নেওয়া হয়েছে জিরো টলারেন্স নীতি।

No comments:

Post a Comment