চট্টগ্রামে সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধের জন্য নেই কোন বিশেষায়িত ইউনিট এবং দক্ষ জনবল। নেই নির্ভুলভাবে অপরাধীর অবস্থান শনাক্ত করতে ব্যবহৃত জিএসএম লোকেশন ফাইন্ডার প্রযুক্তি। এমনকি ল’ফুল ইন্টারসেপশন সেলের (এলআইসি) সদস্যও নয় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ; এলআইসির সদস্য হলে মোবাইল কল লিস্ট ও কথোপকথনের রেকর্ড সরাসরি সংগ্রহ করতে পারতো তারা।
আরো কিছু প্রযুক্তিগত যন্ত্রপাতির ছোঁয়া লাগেনি চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) গায়ে। এ অবস্থায় প্রযুক্তিভিত্তিক অপরাধ সংঘটিত হলে অপরাধী গ্রেফতার দূরের কথা, এর রহস্য উদঘাটন করতেই হিমশিম খাচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। অপরাধ দমনে লাগছে অতিরিক্ত সময়। বাড়ছে ব্যয়।
চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারি কমিশনার (আইটি, প্রশাসন ও পিআর) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সরকার প্রয়োজন মনে করলে এলআইসি’র মেম্বারশিপ দেবে। এখন আমরা পুলিশ সদর দফতরের মাধ্যমে মোবাইলের তথ্যগুলো সংগ্রহ করি। এক্ষেত্রে তথ্য পেতে সময় লাগে। এমনকি দুই-তিন দিনও লাগে। জিএসএম লোকেশন ফাইন্ডার প্রযুক্তি আমাদের না থাকায় আমরা পুলিশ সদর দফতরের সাহায্য নিচ্ছি। সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধের জন্য আলাদা ইউনিট ও আরো দক্ষ জনবল থাকলে ভালোভাবে কাজ করতে পারতাম।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সন্দেহভাজন অপরাধীর মোবাইলে আড়িপাতার জন্য পুলিশের ইউনিটগুলোকে ল’ফুল ইন্টারসেপশন সেলের (এলআইসি) সদস্য হতে হয়। পুলিশ সদর দফতর, সিআইডি, পিবিআই, ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এ সেলের সদস্য। এ সেলের সদস্যরা সরাসরি মোবাইল অপারেটরগুলোর সাথে যোগাযোগ করে সন্দেহভাজন ব্যক্তির মোবাইলের কললিস্ট ও ভয়েস রেকর্ড সংগ্রহ করতে পারে। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ ও জেলা পুলিশ এ সেলের সদস্য নয়। এর ফলে এলআইসি সদস্য পুলিশ সদর দফতরের মাধ্যমে সন্দেহভাজন ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ করে চট্টগ্রামের পুলিশ। এভাবে তথ্য সংগ্রহ করতে দুই থেকে তিনদিন সময় লেগে যায়। এর ফলে অপরাধী গ্রেফতারে পরিচালিত অভিযানগুলোতে সাফল্য আসে কম।
এদিকে সন্দেহভাজন অপরাধী অবস্থান নির্ভুলভাবে সনাক্ত করার জন্য প্রয়োজন হয় জিএসএম লোকেশন ফাইন্ডার নামের এক যন্ত্রের। ঢাকা মহানগর পুলিশ এ প্রযুক্তিটি ব্যবহার করে জঙ্গিসহ ভয়ংকর অপরাধী গ্রেফতারে সাফল্য পেয়েছে। কিন্তু এ প্রযুক্তিটি চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাছে নেই।
এছাড়া সাইবার অপরাধ দমনে ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ আলাদা ‘সাইবার ক্রাইম ইউনিট গঠন করে। ঢাকার এ ইউনিটের সদস্যরা দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ৬ মাসের প্রশিক্ষণ নিয়ে আসেন। কিন্তু চট্টগ্রামে সাইবার অপরাধ দমনে এ ধরনের কোন ইউনিট গঠন করা হয়নি। নেই প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবলও। এর ফলে প্রযুক্তি ভিত্তিক অপরাধের শিকার হয়ে পুলিশের সাছে সাহায্য চাইতে এসে হতাশ হচ্ছেন ভুক্তভোগীরা।
No comments:
Post a Comment